1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

বিশ্ববাজারে ৯ শতাংশ বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২
  • ১৭২ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুদিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার (৭ মার্চ) বিশ্ববাজারে লেনদেন শুরু হতেই জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে গেছে। ইউক্রেনে রাশিয়া আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। এতে জ্বালানি তেল ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে উঠে এসেছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর আগে থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছিল। তবে রাশিয়া আক্রমণ শুরু করার পর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পালে নতুন হাওয়া লাগে।

অবশ্য রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে জ্বালানি তেলের দাম একশ ডলার ছাড়িয়ে যাবে এমন আশঙ্কা আগেই প্রকাশ করেছিলেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নিউইয়র্কভিত্তিক ফরেন এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ওনাডার বিশ্লেষক অ্যাডওয়ার্ড মোয়া বলেছিলেন, ইউক্রেনে আক্রমণ হলে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১০০ ডলার ছাড়াতে কোনো বাধা থাকবে না। তার মতে, ইউক্রেন পরিস্থিতি সম্পর্কিত খবরাখবরের জন্য তেলের বাজার খুবই অস্থির ও সংবেদনশীল থাকতে পারে।

রাশিয়া আক্রমণ শুরুর অল্পসময়ের মধ্যেই বাজার বিশ্লেষকদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হয়। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করতেই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম একশ ডলারে ওঠে আসে। এরপর প্রতিদিন জ্বালানি তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যেই জ্বালানি তেলের দাম ২০ শতাংশের ওপরে বেড়ে যায়।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে চলতি সপ্তাহের লেনদেন শুরু হতেই জ্বালানি তেলের দামে বড় উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। সোমবার (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত) বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৪ ডলার বা ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এতে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১২৪ দশমিক ৪২ ডলারে ওঠেছে। যা ২০০৮ সালের পর বা ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

অপরদিকে, ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ২৮ ডলার বা ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। এতে প্রতি ব্যারেরল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ওঠেছে ১২৮ দশমিক ৩৯ ডলার। ২০০৮ সালের পর ব্রেন্ট ক্রড অয়েলের এত দাম আর দেখা যায়নি। আর প্রতি গ্যালন হিটিং অয়েলের দাম দশমিক ২৮ ডলার বা ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক শূন্য ৬ ডলারে ওঠে এসেছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত রুশ তেল-গ্যাসের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সেই পথেই যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে রুশ তেল আমদানি নিষিদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। রয়টার্সের এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ শতাংশ মানুষ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত শুক্রবার জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য পরবর্তী ধাপের নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে টার্গেট করতে পারে। স্বদেশে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় এখন পর্যন্ত এ পথে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছে ব্রিটিশ সরকার। তবে, গত সপ্তাহের শুরুতেই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করেছে কানাডা। রুশ তেলের বৃহত্তম আমদানিকারক চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডেসের মতো দেশগুলোতে অনেক পরিশোধনকারীই নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে অনীহা দেখাতে শুরু করেছেন।

সৌদি আরবের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক রাশিয়া। তারা দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে থাকে। ফলে মস্কোর ওপর জ্বালানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে তা সংকট আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপের জ্বালানি গবেষণার প্রধান ড্যামিয়েন কুরভালিন মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন, রাশিয়ার তেল ব্যাপকভাবে পরিহার অব্যাহত থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৫০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।

তার মতে, রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্ররা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরে তেলের দাম কমানোর একমাত্র উপায় হবে চাহিদা কমানো। এটি ছাড়া তেলের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানোর আর কোনো রাস্তা নেই।

এর আগে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিলে ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল বিশ্ববাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরপতনের মধ্যে পড়ে তেল। সে দিন প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ঋণাত্মক ৩৭ ডলারের নিচে নেমে যায়।

রেকর্ড এ দরপতনের পরেই অবশ্যই তেলের দাম বাড়তে থাকে। এতে রেকর্ড দরপতনের ধকল সামলে ২০২০ সালের বেশিরভাগ সময় প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৪০ ডলারে আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বেড়ে যাওয়ায় এবং লিবিয়ার তেল উত্তোলন বাড়ায় মাঝে বিশ্ববাজারে তেলের বড় দরপতন হয়। ২০২০ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে অপরিশোধিত ও ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়।

তবে এ পতনের ধকল কাটিয়ে ওই বছরের নভেম্বর থেকে আবার তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। অবশ্য প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৫০ ডলারের নিচে থেকেই ২০২০ সাল শেষ হয়।

আর ২০২১ সালের শুরুতেই তেলের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। কয়েক দফা দাম বেড়ে করোনার মধ্যে প্রথমবার ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৬০ ডলারে ওঠে আসে। এর মাধ্যমে মহামারি শুরু হওয়ার আগের দামে ফিরে যায় তেল।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..